Home বিশেষ প্রতিবেদনচুয়াডাঙ্গায় পুতুলকে ফাঁসাতে পুলিশের নাটক

চুয়াডাঙ্গায় পুতুলকে ফাঁসাতে পুলিশের নাটক

by News Desk
0 comments

প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াছ হোসাইনের একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে বক্তব্য দেয়াকে কেন্দ্র করে চুয়াডাঙ্গার দর্শনা থানার আনোয়ারপুর গ্রামের পুতুল নামে এক নারীকে অবৈধভাবে স্বর্ণ চোরাচালান মামলায় গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

অনুসন্ধানে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান ও তার ভাই টরিক এর চাঁদাবাজি ও এলাকায় করা ভয়ংকর সব অপকর্মের তথ্য ও প্রমাণ তুলে ধরা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে পুতুল অভিযোগ করেছেন, তাকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান, শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তার সম্ভ্রম নষ্ট করেছে।

এ ছাড়া ওই নারী অভিযোগ করে বলেন, এ নিয়ে বিভিন্ন সময়ে পুলিশ ও বিএনপির উচ্চপদস্থ বিভিন্ন নেতাদের কাছে গিয়েও এ ঘটনার কোনো প্রতিকার পাননি। এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর দর্শনা থেকে আসমা খাতুন নামে এক নারীকে তিনটি স্বর্ণের বারসহ আটক করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে বিজিবি। অভিযোগ উঠেছে, ওই ঘটনায় পুলিশের এজাহারে পুতুলের নাম না থাকলেও, টরিকের অদৃশ্য শক্তির মাধ্যমে তাঁকে ফাঁসানো হয়েছে। এমনকি সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যেপ্রনোদীত ভাবে ও-ই মামলায় পুতুলকে গ্রেপ্তারও দেখানো হয়েছে।

এদিকে ইলিয়াছ হুসাইনের প্রতিবেদনের প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিএনপির নামে আলমডাঙ্গা ও সদর উপজেলা নেতা-কর্মীদের নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করা হয়েছে। ওই সম্মেলনে জেলা বিএনপির সভাপতি এমনকি যার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন সেই শরীফও উপস্থিত ছিলেন না।

এ সময়, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম পিটু জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শরীফুজ্জামান শরীফকে রাখাল রাজা হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন। তবে বিএনপিতে একমাত্র রাখাল রাজা বলা হয় দলটির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকে। আর ঘনিষ্ঠ অনুসারীদের দিয়ে নিজের নামের আগে স্বঘোষিত রাখাল রাজা বলিয়ে নেয়াকে খারাপভাবে দেখছেন দলীয় নেতা-কর্মীরা।

স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা বলছেন, শরীফ তার ভাইয়ের প্রভাব আর টাকার জন্য নিজেকে অনেক বড় মনে করেন। তার কারণে চুয়াডাঙ্গা-এক আসনে বিএনপি তিন-চার ভাগে বিভক্ত। তিনি এখন নিজেকে রাখাল রাজা হিসেবে প্রচার করছেন।

এ ছাড়া সফিকুল সংবাদ সম্মেলনে জাসদ ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী সাহিদুজ্জামান টরিকের সাফাই গেয়ে তাকে স্বনামধন্য ব্যবসায়ী, শ্রেষ্ঠ রেমিট্যান্স যোদ্ধা দানবীর হিসাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। এমনকি তিনি চুয়াডাঙ্গার জন্য যা করেছে এখন পর্যন্ত তা কেউ করেনি বলেও দাবি করেছে উপস্থত নেতারা। তবে, একসময়ের জাসদ নেতা এবং আওয়ামী লীগের সুবিধাভোগী টরিকের পক্ষে বিএনপির নেতার গুণগান ভালভাবে দেখছেন না নেতা-কর্মীরা। এ নিয়ে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের মধ্যে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদি ইলিয়াছের বাড়ি জীবননগরে উল্লেখ করা হয়েছে। তবে সেটি সঠিক নয়। একইভাবে তার বাবার পরিচয়ে ভিন্ন ব্যক্তির তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। এ ছাড়া সফিকুলের সংবাদ সম্মেলনে ইলিয়াছকে চাঁদাবাজ বললেও কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি তারা।

এ ছাড়া, সাংবাদিক ইলিয়াছকে জামায়াতের এজেন্ট, আবার কখনো বিএনপির একজন মনোনয়ন প্রত্যাশীর পক্ষে কাজ করার দাবি করা হয়েছে, যা বিভ্রান্তিকর। এদিকে পুতুল বিএনপি পরিবারের বলে তথ্য আছে, সাংবাদিকের এমন প্রশ্নে সফিকুল বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই। এসবের মাঝে পুতুলকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় মানববন্ধন করেছে চুয়াডাঙ্গার সাধারণ মানুষ।

এসব বিষয়ে কথা বলতে বিএনপির চুয়াডাঙ্গা জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক শপিকুল ইসলাম পিটুর ফোনে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

You may also like

Leave a Comment